Description
আম একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় সুস্বাদু ফল। স্বাদে, গন্ধে, বর্ণে ও পুষ্টিমানে আমের বিকল্প শুধু আম। তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয়। আম সাধারণত কাঁচা, পাকা এমনকি ফ্রোজেন অবস্থায়ও খাওয়া যায়। এছাড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে আম থেকে আমসত্ত্ব, জুস, পিওরি, আচার, চাটনি এসব তৈরি করা যায়। ফল হিসেবে খাওয়ার পাশাপাশি আইসক্রিম, বেকারি পণ্য ও কনফেকশনারিতেও পাকা আম ব্যবহার হয়ে থাকে। আমে প্রচুর পরিমাণ আঁশ, ভিটামিন সি, প্রো ভিটামিন এ, ক্যারোটিন ও বিভিন্ন প্রকার পলিফেনল নামক উপাদান থাকে।
আমরাজ্য হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশে প্রতিবারই যুক্ত হচ্ছে নতুন আমের জাত। আমাদের দেশে জনপ্রিয় কতগুলো দেশি আমের জাত রয়েছে যেমন- গোপালভোগ, ল্যাংড়া, হাঁড়িভাঙা, ক্ষীরসাপাতি, হিমসাগর, ফজলি, আশ্বিনা, বারি আম-২, বারি আম-৩, বারি হাইব্রিড আম-৪ ইত্যাদি। আবার বিদেশী জাতগুলোর ভিতর চিয়াংমাই , কিং অফ চাকাপাত, ডক-মাই, জাপানের মিয়াজাকি, আমেরিকান পালমার, আপেল ম্যাংগো , ব্লাকস্টোন, বুনাই কিং, হানিডিউ বা নৌকা আম, আলফেনসো, কিউজাই, ব্যানানা ম্যাংগো, ইন্ডিয়ান চোষা ইত্যাদি।
আমেরিকান পালমারঃ
আমেরিকার সু বিখ্যাত রেড পালমার আম। এই আমটি যেমন ব্যতিক্রম তেমনি গাছটি অন্য সব গাছ থেকেও ব্যতিক্রম। গাছের শাখা গুলিও আমের মতই লাল বর্ণের। আমটি যখন পাকতে শুরু করে এর গায়ের রঙও লালচে হতে থাকে। এটি ছাদ/বাগানের সৌন্দর্যই বাড়িয়ে দেয়। এটি খেতেও বেশ সুস্বাধু। এই আম গাছটি আমেরিকার ফ্লোরিডার মিসেস ভিক্টর মেলের অধীনে ১৯২৫ সালে বীজ থেকে জন্ম নেয়। পরের কয়েক দশক পর্যন্ত এই গাছ সম্পর্কে কিছু জানা না গেলেও ২০০৫ সালে জানা যায় এটি পামর হ্যাডেনের বীজ ছিলা। পরবর্তীতে এটি সরকারি ভাবে নামকরন করা হয় আমেরিকান পালমার।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য
প্রচলিত নামঃ আমেরিকান পালমার
গাছের ধরনঃ ফলজ বৃক্ষ
জাতঃ বিদেশি
সূর্যালোকঃ পূর্ণ সূর্যালোক
মাটি নির্বাচনঃ যে কোন মাটি, উর্বর দো-আঁশ বেশি উপযোগী
বংশবৃদ্ধিঃ অঙ্গজ, বীজ
সংক্ষিপ্ত নির্দেশিকা
গাছের অবস্থান নির্ণয়ঃ কোন কোন গাছ বেশি রোদ পছন্দ করে (কাগজি লেবু, ড্রাগন ফল) কোন গাছ আধা ছায়ায় ভালো হয় (এলাচি লেবু, জামরুল), আবার কোনো গাছ ছায়া পছন্দ করে (লটকন, রামবুটান)। এজন্য কাঙ্ক্ষিত গাছ থেকে বেশি সুফল পেতে রোদের/আলো-বাতাস প্রাপ্তি অবস্থা বুঝে গাছের অবস্থান চূড়ান্ত করা প্রয়োজন।
উপযুক্ত জমি ও মাটিঃ যে কোন চারা রোপণের পূর্বেই সঠিক জায়গা ও মাটি নির্বাচন করা উচিত। যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে, বন্যামুক্ত উঁচু জায়গা নির্বাচন করে জায়গাটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। সঠিক মাটি নির্বাচনের জন্য উপরের বিশেষ বৈশিষ্ট্য থেকে এ বিষয়ে ধারনা নেয়া যেতে পারে।
পানিঃ অতিরিক্ত পানি দেয়া এবং অতি কম দেয়া উভয়ই গাছের জন্য ক্ষতিকর। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, বেশি পানি দেয়ার ফলে বিভিন্ন রোগে গাছ আক্রান্ত হয়, এমনকি মারা যায়। এ জন্য গাছের গোড়া শুকালেই কেবল পানি দেয়া যাবে, গোড়া ভেজা থাকলে কোনো মতেই তাতে পানি দেয়া যাবে না। কিছু গাছ বেশি পানি গ্রহণ করে আবার অনেক গাছে পানি কম লাগে। বৃষ্টি বা নালায় জমে থাকা পানি গাছ বেশি পছন্দ করে। তবে সকাল বেলা গাছে পানি সেচ দেয়া উত্তম।
পোকা-মাকড় দমনঃপ্রাথমিক অবস্থায় শুরুতে সীমিত সংখ্যক পোকা বা তার ডিমের গুচ্ছ দেখা যায়। নিয়মিত রোপণ করা গাছগুলো পরীক্ষা করে দেখা মাত্র পোকা বা পোকার ডিমগুলো সংগ্রহ করে মেরে ফেলা ভালো। পাতার নিচে ভাগে পোকামাকড় অবস্থান করে। অনেক ক্ষেত্রে বয়স্ক পাতায় পোকামাকড় বেশি দিন আশ্রয় নেয়। এ জন্য পাতা হলুদ হওয়া মাত্র পাতার বোটা রেখে তা ছেঁটে দিতে হয়। পোকা-মাকড়ের উপদ্রব বেশি হলে অভিজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী জৈব পদ্ধতি অবলম্বনে গাছকে পোকার হাত থেকে নিরাপদ রাখা যেতে পারে। কীটনাশক ব্যবহার কালে খেয়াল রাখতে হবে যেন তার টকসিসিটি কম সময় থাকে।
আগাছাব্যবস্থাপনা ও অঙ্গ ছাঁটাইকরণঃকাংখিত গাছকে সুষ্টুমত বাড়তে দেয়ার জন্য ক্ষত ও রোগাক্রান্ত ডাল কেটে বাদ দেবা প্রয়োজন। ধারালো সিকেচার বা বিশেষ এক প্রকার ছুরি দিয়ে অঙ্গ ছাঁটাই করতে হয়। ডাল কাটার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন থেঁৎলে না যায়। এতে গাছে ছত্রাক রোগের আক্রমণ হতে পারে। গাছের নিচে ক্ষতিকর আগাছার কারনে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সার প্রয়োগঃ গাছের সঠিক বৃদ্ধি ও কাঙ্খিত ফলাফল এর জন্য গাছের বৃদ্ধি ও ফুল ধরার সময় সঠিক মাত্রায় জৈব সার ব্যবহার করতে হবে। সে ক্ষেত্রে অধিকাংশ গাছের ক্ষেত্রেই ১৫ দিন বা এক মাস অন্তর অন্তর সার প্রয়োগ করতে হবে। রাসায়নিক সার ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।
Reviews
There are no reviews yet.